সোমবার, ২০ মে ২০২৪, ১২:০৮ অপরাহ্ন

রাবির সাবেক ভিসি সোবহানের দেওয়া ১৩৮ নিয়োগ স্থগিত

রাবির সাবেক ভিসি সোবহানের দেওয়া ১৩৮ নিয়োগ স্থগিত

স্বদেশ ডেস্ক:

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) সাবেক ভিসি অধ্যাপক ড. এম আবদুস সোবহানের মেয়াদের শেষ কার্যদিবসের আগের রাতে দেওয়া ১৩৮ জনের নিয়োগ কার্যক্রম স্থগিত করেছেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে এক রিটের পরিপ্রেক্ষিতে গতকাল সোমবার বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি মো. কামরুল হোসেন মোল্লার বেঞ্চ রুলসহ এ আদেশ দেন। আদালত সাবেক এই ভিসির বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তদন্ত করে দুদককে ১৪ নভেম্বরের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করতে বলেছেন। রুলে বলা হয়েছে, পদের অপব্যবহারের মাধ্যমে

বিশ্ববিদ্যালয় আইন, ১৯৭৩-এর বিধান ও নিয়োগ নীতি লঙ্ঘন করে গত ৫ ও ৬ মে এম আবদুস সোবহানের শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীর নিয়োগ কেন অবৈধ ও আইনগত কর্তৃত্ববহির্ভূত ঘোষণা করা হবে না? সেই সঙ্গে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে গঠিত তদন্ত কমিটির সুপারিশ অনুযায়ী আবদুস সোবহানের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে শিক্ষা সচিব, দুর্নীতি দমন কমিশনের চেয়ারম্যান ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যকে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, তাও জানতে চাওয়া হয়েছে রুলে।

শিক্ষা সচিব, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) চেয়ারম্যান, দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যান ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, রেজিস্ট্রার ও সাবেক উপাচার্য এম আবদুস সোবহানকে চার সপ্তাহের মধ্যে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে। আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল নওরোজ মো. রাসেল চৌধুরী। জ্যোতির্ময় বড়ুয়া বলেন, ৫ মে রাতে ১৩৮ জনের নিয়োগ তিন মাসের জন্য স্থগিত করেছেন হাইকোর্ট। আদালত বিশ্ববিদ্যালয়টির ২০১৭ সালের শিক্ষক নিয়োগ নীতিমালা স্থগিত এবং দুদককে ভিসির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়ে ১৪ নভেম্বরের মধ্যে আদালতে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।

গত ৩১ আগস্ট কনজ্যুমার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) পক্ষে স্থপতি মোবাশ্বের হোসেন রাবিতে নিয়োগ দেওয়ার বিষয়ে রিট করেন। রিটে বিতর্কিত নিয়োগ স্থগিতের পাশাপাশি ভিসি সোবহানের দুর্নীতির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে নির্দেশনা চাওয়া হয়।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হিসেবে গত ৬ মে ছিল অধ্যাপক আবদুস সোবহানের শেষ কর্মদিবস। কিন্তু শেষ দিনে তিনি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারী পদে ১৩৮ জনকে ‘অ্যাডহক’ (অস্থায়ী) ভিত্তিতে নিয়োগ দেন। তা নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে উত্তেজনার মধ্যে পুলিশ পাহারায় উপাচার্য ভবন ছাড়তে হয়েছিল অধ্যাপক সোবহানকে। এ নিয়োগকে কেন্দ্র করে সেদিন বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগ এবং বিশ্ববিদ্যালয় কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সংঘর্ষ হয়।

একই দিনে ওই নিয়োগের কার্যকারিতা স্থগিত রেখে চার সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। ইউজিসির সদস্য অধ্যাপক মো. আলমগীরকে কমিটির প্রধান করা হয়। এ তদন্ত কমিটি গত ২৩ মে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়; যেখানে ১৩৮ জনের নিয়োগকে সম্পূর্ণ অবৈধ উল্লেখ করে তা বাতিলের সুপারিশ করা হয়। সেই সঙ্গে সোবহানসহ দোষী ব্যক্তিদের বিচারের আওতায় আনা এবং তার বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞার সুপারিশ করে ওই তদন্ত কমিটি। তদন্ত প্রতিবেদনে ড. সোবহান, একজন ডেপুটি রেজিস্ট্রার, দুজন সহকারী রেজিস্ট্রার এবং ভিসির মেয়ে-জামাতাকে বিতর্কিত নিয়োগে সরাসরি দায়ী বলে চিহ্নিত করা হয়েছে। এ ছাড়াও এর আগে উদ্দেশ্যমূলকভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়োগ নীতিমালা সংশোধন করে নিজের মেয়ে-জামাতাসহ ৩৪ জন শিক্ষককে অবৈধ উপায়ে নিয়োগ দেন। এসব নিয়োগকে অবৈধ আখ্যা দিয়ে ১৭৫ জনের নিয়োগ বাতিলের সুপারিশ করে এ তদন্ত কমিটি।

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..

© All rights reserved © 2019 shawdeshnews.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com
themebashawdesh4547877